অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক খেলে শরীরের কী ক্ষতি হয়
প্রকাশিত : ২০:৩২, ১৩ নভেম্বর ২০১৮
সামিনা ইয়াসমিন নামে একজন বলছিলেন, প্রায় দেড় বছর আগে তার কানে ইনফেকশন হয়। তারপর তিনি চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করেন। ডাক্তার তাকে ৫ দিনের কোর্স দেন। কিন্তু তিনি তিনদিন পর ভালোবোধ করায় ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দেন।
এরফলে দেড় মাস পর আবার কানে ব্যথা শুরু হয়। এরপর তিনি নিজে নিজেই ঐ একই ওষুধ কিনে খেতে থাকেন। দুই এক মাসের জন্য সুস্থ থাকলেও আবারো ফিরে আসে কানের ব্যথা।
ইয়াসমিন বলছিলেন, এরপর ডাক্তারের কাছে গেলে আগের চেয়ে বেশি মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক তাকে দেয়া হয় এবং বলা হয় আগের ওষুধ তার শরীরে রোগ-প্রতিরোধে আর কাজ করছে না।
শরীরের কী ক্ষতি হয়?
প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিতে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু অনেকেই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খান ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই। আবার অনেকে নির্দিষ্ট কোর্স শেষ করেন না। কী ক্ষতি হয় এতে শরীরের?
হলি ফ্যামিলি কলেজ এবং হাসপাতালের নাক,কান গলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ডা.মোহাম্মদ জাকারিয়া বলছিলেন, সাধারণত ভাইরাল ইনফেকশন যেমন সর্দি,কাশি জ্বর এসবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাবহার করা উচিত নয়। তবে যদি ইনফেকশন বা সংক্রমণ দ্বিতীয় পর্যায়ে যায় তখন দেয়া যেতে পারে।
তিনি বলছিলেন, অ্যান্টিবায়োটিকের মূল লক্ষ্য থাকে রোগের জীবাণু একদম মেরে ফেলা।
জাকারিয়া বলছিলেন, "চিকিৎসক একজন রোগীর অবস্থা বুঝে ৫ থেকে ৭ দিনের একটা কোর্স দিয়ে থাকেন। কিন্তু কেউ যদি সেই সময়ের আগে, ধরেন দুই দিন খেয়ে আর খেল না, তখন যেটা হয়, ঐ অ্যান্টিবায়োটিক রোগীর শরীরে অকার্যকর হয়ে পড়ে। তখন ঐ রোগীর জন্য আগের চেয়ে বেশি মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দরকার হয়ে পরে।"
মানুষের শরীরের অ্যান্টিবায়োটিকের অতি ব্যবহার বা কোর্স শেষ না করার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে দিতে।
প্রথমত, তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে যায়। ডা.জাকারিয়া বলছিলেন, এমনিতেই বাতাসে নানা ধরণের জীবাণু, ভাইরাস থাকে। সেগুলো প্রতিরোধ করার ক্ষমতা হারিয়ে যায়। ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পরে। যেকোন রোগে সহজেই আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বেড়ে যায়।
তিনি বলছিলেন, "সাধারণত খুব সিরিয়াস অবস্থা না হলে চিকিৎসকদের অ্যান্টিবায়োটিকের নির্দেশনা দেয়া ঠিক না।" বিবিসি বাংলা
এসি